নদী
জীবন যদি নদী হয়
তেমনি সুখ দুঃখের ধারাবহ দেখো--
সময় টেনে নেয় দুরে--
কখনও খর স্রোত উচ্ছলতায় খলবল যৌবন তার
আমাদের বসন্তের জোয়ারের মত
কখনও নেচে ওঠা অন্তর্দেশ...
কখনও খরার তাড়নায় সেও পিপাসার্ত হুতাশী,
আবার স্রোতহীন বন্ধ্যার মত পড়ে
থাকা জননী দাহে...
বালুচর নদীর স্মৃতি হয়ে থাকে—
কে জানত আবার বর্ষায় জন্ম নেবে সে !
ঠিক আমাদেরই মত আবার ভালবাসার ঈপ্সিত দৃষ্টিতে
ভরে উঠবে বুক !
তৃষ্ণার্ত সঙ্গমে দেখ কত তার কলকল বাঁধ ভাঙার
প্রবলতা--
তারপর নিজের অস্তিত্বটুকুর বিলীয়মান নির্লিপ্ততা
ঠিক যেমনটি একটি জীবন ভাবনায় নদী-প্রাণের কথা।
অমৃত
অমৃতের স্বাদ পাই নি কখনও,
ঠিক কতখানি ঈপ্সিত বাসনা তলে জেগে থাকে ঘুম
অথবা চেতনার ছবি কতখানি জাগ্রত হতে পারে—
অগ্নি স্পর্শেও যদি অমর ?
এই দীর্ঘ যাত্রা পথ হবে অফুরান—
মনের চত্বরে সেই,সেই একই ছবির মহড়া,
মহুয়া ঘ্রাণের স্বাদহীন এক ঘেয়ে শরীরের
পদযাত্রা--অরণ্য,লোকালয়
সরীসৃপী রাস্তা ধরে হেঁটে চলা আর হেঁটে চলা...
তার চে ছিন্ন মাদুরে শুয়ে তবু দেখো যদি স্বপ্ন,
তবু ভাল বাস্তবের মাটি থেকে সরে থাকা--
সুখ দুঃখের আতুর ভাবনা নিয়ে কত আর রাত্রি জাগরণ
!
এক বোঝা দুঃখ নিয়ে--যন্ত্রণার বেড়বন্দী কতটুকু
সহন হবে--যদি বলো,অমর !
তবে তো এই হবে ভাল,কালের সুখ দুঃখ নিয়ে না হয়
নশ্বর হব আগামীর প্রতীক্ষায় !
সেও ভাল,বারংবার পরিত্যক্ত জীবন
সোপান ধরে
অনন্ত এ আসা যাওয়া-- অমৃত তো শুধু বাঁচার আশায়
চেয়ে থাকা জীবন--অনন্ত বেঁচে থাকার বেদনা তবে
কেন হবে নীলাভ বিষ পেয়ালা ?
ছবি
একই মানুষ—
সেই ছুটে চলা মানুষের ভিড়ে কোথাও তুমি নেই—
ঘরের বাইরে কতক রোবটের সক্রিয় যাপন গাঁথা—
সবুজ মাঠ নেই,রঙিন ফুল নেই,শুধু দুপুরের ঘোলাটে রোদ
আর সমুদ্র স্রোতের তোড়ে গা ভাসা কিছু প্রাণীদের
কথা লেখা আছে।কিছু ছবি বসানো ছোট থেকে বড় অট্টালিকার সারি,
অলিগলির বিলীন রেখা--
কখনও শব্দের আড়ালে ধোঁয়া—আর পোড়া মানুষের গন্ধ !
প্রতীক্ষা-–এক জনের অনন্ত প্রতীক্ষা—প্রতিদিনের ক্লান্ত জর্জর ঘরে ফিরে আসা লোকটা কোন একদিন যদি ফিরে
না আসে—
বাইরের কোলাহল মুখর প্রতিদিনের ঘর্ষণ তেমনি চলবে—শুধু একটি লোকের না ফিরে আসার কথা আর কেউ জানবে না !
0 comments:
Post a Comment